বশির আরমামুন : চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকা নিলাম অযোগ্য ২২০ কন্টেইনার পণ্য বুধবার (১১ জানুয়ারী) থেকে ধ্বংস করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসব কন্টেইনারে রয়েছে-রসূন, ফলমূল, ক্যানোলা সিড, ফিস ফিড, মহিষের মাংস এবং মাছ।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় নগরের মধ্যম হালিশহর আনন্দ বাজার বেড়িবাঁধ এলাকার বে-টার্মিনালের সামনে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ এসব পণ্য ধ্বংস করা হচ্ছে। বধবার প্রথমদিনে ২৫ কন্টেইনার পণ্য ধ্বংস করেছে কাস্টমস।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার (প্রিভেন্টিভ শাখা) মো. মাহফুজ আলম বলেন, প্রতিদিন ২০–২৫ কন্টেইনার ধ্বংসের উদ্যোগ নিয়েছে কমিটি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশা করি আমরা নির্ধারিত সময়ে ধ্বংস কার্যক্রম শেষ করতে পারবো। বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, নিলাম অযোগ্য পণ্য বন্দরের জন্য একটি বিশাল সমস্যা। অনেক সময় আইনি জটিলতায় নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংস করতে পারে না কাস্টমস। ফলে বন্দর ইয়ার্ডে এসব কন্টেইনারের জন্য জট লেগে যায়। নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংসের জন্য কাস্টমসে স্থায়ীভাবে একটা স্থান নির্ধারণ করা উচিত।
নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে।
অন্যদিকে আমদানিকারক যথাসময়ে পণ্যভর্তি কন্টেনার খালাস না করলে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটে। এক্ষেত্রে পচনশীল পণ্যভর্তি কন্টেইনার একটি বড় সমস্যা। খালাস না হওয়া এসব কন্টেইনার শিপিং কোম্পানির জন্যও বিপদের। কারণ এসব কন্টেনারে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিতে হয়। আমদানিকারক খালাস না নিলেও বৈদ্যুতিক সংযোগ চাইলেও বিচ্ছিন্ন করা যায় না।
এর আগে চট্টগ্রাম বন্দর ও বিভিন্ন বেসরকারি ডিপোতে থাকা ২৬টি বিএল নম্বরভুক্ত পণ্যচালান ধ্বংস তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে কাস্টমস। বিএলভুক্ত পণ্যচালানগুলোর বিপরীতে আমদানিকারকের কোন মামলা, আপত্তি বা নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে সাতদিন সময় নেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে গত ৩ জানুয়ারি একটি চিঠিও ইস্যু করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সাতদিন শেষে আজ থেকে পচে যাওয়া পণ্যগুলোর ধ্বংস কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
Leave a Reply